পাঁচ দিনের দুর্গোৎসবের ষষ্ঠী তিথিতে মণ্ডপে মণ্ডপে দেবীর অধিষ্ঠান হয়।এ সময় বেলতলা কিংবা বেলগাছের নিচে দেওয়া হয় ষষ্ঠীপূজা। সন্ধ্যায় দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস ছাড়াও সব মণ্ডপে পুষ্পাঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও ভোগআরতির আয়োজন করা হয়।উৎসবের দ্বিতীয় দিন আজ মহাসপ্তমী। সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী, মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপাচারে দেবী দুর্গাকে পূজা হবে। অর্থাৎ ষোলটি উপাদান দিয়ে মহাসপ্তমীর দিনে দেবী দুর্গাকে পূজা করা হয়। এছাড়া দেবী দুর্গার চুক্ষদানের পর ভক্তরা আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা করবেন।সপ্তমীর সকালে বারোয়ারি থেকে বনেদি বাড়ি সমস্ত পুজোর নবপত্রিকা স্নান করানো হয়। এর মধ্যে দিয়েই শুরু ধুয়ে যায় পুজোর ধুমধাম।

গবেষকদের মতে নবপত্রিকা প্রকৃত পক্ষে শস্যের পুজো। বিশেষজ্ঞ শশিভূষণ দাশগুপ্ত লিখেছেন, শস্যকেই বধূরূপে বা দেবী রূপে পুজো করা হয়। এটাই মূলত শারদীয়ার পুজো। প্রাচীনকালে দূর্গার সঙ্গে প্রকৃতিকে মিলিয়ে দেওয়ার একটা চেষ্টা করা হত। অন্যদিকে ইংসনারায়ণ ভট্টাচার্য দুর্গা পুজোর সঙ্গে শস্য পুজোর অনুষঙ্গ স্বীকার করলেও শাকম্ভরী তত্ত্বে নবপত্রিকার উৎস মানা হয়নি। দূর্গা পুরাণে নবদূর্গার কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু নবপত্রিকার কথা নেই। আবার কালিকা পুরাণে নবপত্রিকার উল্লেখ নেই। কিন্তু সপ্তমী তিথিতে পত্রিকা পুজোর নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। মার্কণ্ডেয় পুরাণে নবপত্রিকার উল্লেখ না থাকলেও কৃত্তিবাসী রামায়ণে এই প্রথার উল্লেখ রয়েছে।

মহাসপ্তমীর সকালে নবপত্রিকা স্নানের রীতে এখন প্রচলিত। কলাগাছের সঙ্গে আরও আটটি গাছ বা গাছের ডাল একত্রিত করে নবপত্রিকা তৈরি করা হয়। তারপর সেটিকে একটি লালপাড় সাদা শাড়িতে মুড়ে অনেকটা নববধূর আকার দেওয়া হয়। মূলত পুরোহিতই নবপত্রিকা স্নান করান। দেবীর ডানদিকে গণেশের পাশেই স্থাপন করা হয় নবপত্রিকাকে। অনেকে নবপত্রিকাকে কলাবউও বলে থাকেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

seven + 9 =