আদালতের নির্দেশে হরিশ্চন্দ্রপুরে ২০১৭ সালের বন্যাত্রাণ দুর্নীতির ঘটনার তদন্ত শুরু করল ক্যাগ,
আদালতের নির্দেশে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে বন্যাত্রাণ দুর্নীতির ঘটনার তদন্ত শুরু করল ক্যাগ(কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল)। কেন্দ্রী সংস্থা ক্যাগের একদল প্রতিনিধি হরিশ্চন্দ্রপুরে পৌঁছান! ব্লকে খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি তারা বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতেও যান বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রশাসন জানায়, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ক্যাগ ওই দুর্নীতির তদন্ত করছে! ফলে স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকরা এই বিষয়ে বিস্তারিত মুখ খুলতে চাননি। তবে ক্যাগ তদন্ত শুরু করায় এবার বঞ্চিত উপভোক্তারা তাদের প্রাপ্য পাবেন বলে আশায় বুক বাঁধছেন তারা।
প্রশাসন ও বরুই গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে হরিশ্চন্দ্রপুরে ভয়াবহ বন্যা হয়। শুধু বরুইয়েই ক্ষতিগ্রস্থ হন সাত হাজারেরও বেশি বাসিন্দা। তাদের ক্ষতিপূরণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার। যারা আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন তাদের জন্য রাজ্য সরকার ৩৩০০ টাকা করে বরাদ্দ করে। আর যাদের ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল তাদের জন্য বরাদ্দ হয় ৭০ হাজার টাকা করে। কিন্তু ত্রাণের টাকা বিলি হতেই তা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে বিরোধীরা। তালিকায় নাম থাকলেও তারা টাকা পাননি বলে দুর্গতদের একাংশ প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। কিন্তু প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে কলকাত হাই কোর্টে মামলা হয়। মামলাটি করেন বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তারপরই প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সোনামনি সাহার বিরুদ্ধে এফআইআর করেন বিডিও অনির্বাণ বসু। প্রধান সোনামনি সাহা ছাড়াও বরুইয়ের তৃণমূল নেতা আফসার আলি, হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রোশনারা খাতুনের নামেও এফআইআর করা হয়। তারা আপাতত জামিনে রয়েছেন। তবে বরুইয়ের পাশাপাশি ব্লকের একাধিক পঞ্চায়েতেও বন্যাত্রাণ বিলিতে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায় যে, ওই দুর্নীতির সঠিক তদন্ত হয়নি। তারপরেই হাই কোর্ট ক্যাগকে তদন্তভার দেন। তদন্ত করে সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এবার তারই তদন্তে করতে হরিশ্চন্দ্রপুরে পৌঁছেছেন ক্যাগের প্রতিনিধিরা। দুর্নীতির ঘটনায় কার কি ভূমিকা রয়েছে তার সমস্ত কিছুই ক্যাগ খতিয়ে দেখছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
চাঁচলের মহকুমাশাসক কল্লোল রায় বলেন, ক্যাগ আদালতের নির্দেশে তদন্ত করছে। বিষয়টি বিচারাধীন। তাই এর বেশি কিছু বলতে পারব না।
