এভারেস্টে পা রাখা যেমন কঠিন কাজ, সেই রকম এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে পৌঁছোতে গেলেও ১১ দিনের ট্রেক করতে হয়। এই ট্রেক করতে গেলেও শারীরিক ভাবে সক্ষম হওয়া জরুরি। আর এর সঙ্গে চাই অদম্য মানসিক জোর এবং প্রশিক্ষণ। পর্বতারোহণের সঠিক প্রশিক্ষণ ছাড়া সেখানে পৌঁছোনো মানে এক রকম নজির তৈরি করা। সেই নজিরই সৃষ্টি করেছেন মালদার চাঁচলের তিন অভিযাত্রী। সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে তাঁরা দুর্গম এই অভিযান সফল করেছেন। এই খবরে খুশি জেলাবাসীও।
এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের উচ্চতা ৫৩৬৪ মিটার। মালদায় পর্বতারোহণের কোনও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা বেসরকারি সংস্থা নেই। স্বাভাবিক ভাবেই নিজেরাই নিজেদের প্রশিক্ষিত করে বেরিয়ে পড়েছিলেন ট্র্যাকিংয়ে। তিন অভিযাত্রী তরুণ কুমার রায়, প্রিয়জিৎ সরকার ও পার্থ রজক। তারা প্রত্যেকে চাঁচলের চলের বাসিন্দা। তরুণ চাঁচলের সদরপুর স্কুলের সহ-শিক্ষক, প্রিয়জিত সরকার চাঁচলের সিদ্ধেশ্বর ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক ও পার্থ রজক
চাঁচল ১ নং ব্লকের খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের কর্মী।
৮ অক্টোবর তাঁদের এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে পৌঁছে আনন্দে আত্মহারা লুকলা থেকে ট্রেকিং শুরুর কথা থাকলেও আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে ঘুর পথে যেতে হয় তাদের। কাঠমান্ডু থেকে গাড়িতে রামেছাপ সেখান থেকে আবহাওয়া প্রতিকূলতার জন্য অভিযান সম্ভব হয়নি। অপেক্ষা না করে রামেছাপ থেকে গাড়িতে করে ফাপলু। সেখান থেকে গাড়িতে খারিখোলা পরের দিন অর্থাৎ ১০ই অক্টোবর খাড়িখোলা থেকে অভিযান শুরু। ১৬ই অক্টোবর লবুচে গোরাপশেপ এবং সেখান থেকে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে ১৭ হাজার ৬০০ ফুট উচ্চতায়। এভারেস্ট বেস্ট ক্যাম্পে পৌঁছে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান তারা সেদিন ভোরের দিকে তাপমাত্রা বারো ডিগ্রি হিমাঙ্কের নিচে যদিও সেখান থেকে ফিরতে সময় লেগেছে মাত্র দুদিন। এর আগে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে মালদা থেকে নিজেদের উদ্যোগে কেউ যায়নি বলে দাবি তাদের। তিন অভিযাত্রীর মধ্যে প্রিয় জিৎ সরকার ও পার্থ রজক বলেন, আমরা শৃঙ্গ ছোঁয়ার নেশায় নিজেদের গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে চলেছি। এই যাত্রা আমাদের খুব দুর্গম ছিল। তবু আমরা যেতে পেরেছি।