কীভাবে আত্মহত‍্যাকে প্রতিরোধ করবেন?

কীভাবে আত্মহত‍্যাকে প্রতিরোধ করবেন?

আত্মহত্যা বা আত্মহনন ইংরেজিতে যাকে আমরা বলে থাকি ‘সুইসাইড’।কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়া বা স্বেচ্ছায় নিজের প্রাণনাশের প্রক্রিয়াবিশেষ।ল্যাটিন ভাষায় ‘সুই সেইডেয়ার’থেকে আত্মহত্যা শব্দটি এসেছে, যার অর্থ হচ্ছে নিজেকে হত্যা করা। চিকিৎসকেরা আত্মহত্যার চেষ্টা করাকে মানসিক অবসাদজনিত গুরুতর উপসর্গ হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন।ইতিমধ্যেই বিশ্বের অনেক দেশেই আত্মহত্যার প্রচেষ্টাকে এক ধরনের অপরাধরূপে ঘোষণা করা হয়েছে।
১০ সেপ্টেম্বর তারিখটিকে আন্তর্জাতিক ‘আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।বিশ্বে আত্মহত্যা প্রতিরোধে ২০০৩ সাল থেকে প্রতিবছর ১০ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থা দিবসটি পালন করে আসছে।২০০৩ সাল থেকে দিবসটি পালন করা শুরু হলেও ২০১১ সালে প্রায় ৪০টি দেশ এই দিবসটি উদযাপন করে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৪ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে ৮ লাখেরও বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেন। সংস্থাটির মতে, প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন মানুষ আত্মহত্যা করেন।প্রায় ১৫ থেকে ২০ গুণ মানুষ আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, আমাদের দেশে প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন মানুষ আত্মহত‍্যার পথ বেছে নেয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আত্মহত্যা করে ২১ বছর থেকে ৩০ বছরের নারী। এ বয়সী কিছু পুরুষও নানা কারণে আত্মহনন করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দিলে যে আচরণগুলি লক্ষ্য করা যায়-

১. আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দিলে ব্যক্তির মানসিক পরিবর্তন দেখা যায়। সেই সকল ব্যক্তি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করতে থাকে।

২. প্রচুর ঘুমোনো বা একেবারেই ঘুম না হওয়া।

৩. আশেপাশের পরিবেশ থেকে নিজেকে সরিয়ে ফেলা, গুটিয়ে নেওয়া নিজেকে। এমনকি দৈনন্দিন জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা।

৪. নেশা করা।

৫. একাকীত্বে ভোগা।

৬. খুব সামান্য কারণে রেগে যাওয়া।

আত্মহত্যা নিয়ন্ত্রণে যে কৌশলগুলি কার্যকর-

১.চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
২. আপনার নিকট আত্মীয় যদি এই রকম মানসিক অবসাদে ভোগেন, তাকে সেই অবসাদ থেকে বের হতে সাহায্য করা।

৩. সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মঘাতী আচরণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

৪. ওই ব্যক্তির প্রতি ভালোবাসা ও যত্নের মনোভাব বাড়াতে হবে।

৫. হতাশাগ্রস্ত মানুষদের জীবনের প্রতি আগ্রহ তৈরি করা।
বিশেষজ্ঞদের মতে,করোনা মহামারীতেও আত্মহত্যার প্রবণতা অনেকটাই বেড়েছে। দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকায় দেখা দিয়েছে মানসিক অবসাদ। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু সংস্থা আত্মহননের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

six + two =