দীঘায় জগন্নাথ ধামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন।
২০২২-২৩ সালের মধ্যেই দীঘার জগন্নাথ দেবের মন্দির সম্পূর্ণ হয়ে যাবে এমনটাই জানালেন রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী অখিল গিরি।অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষ্যে দীঘায় জগন্নাথ ধাম তৈরি হওয়ার জন্য নারকেল ফাটিয়ে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন অখিল গিরি। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, দিঘাতে পুরীর আদলে গড়ে তোলা হবে জগন্নাথ দেবের মন্দির এবং সেই মন্দিরের জন্য ইতিমধ্যেই ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পরবর্তীকালে আরো আনুষাঙ্গিক কাজের জন্য আরো টাকা বরাদ্দ করা হবে বলে মন্ত্রী জানান।
প্রসঙ্গত ২০১৯ সালে দীঘায় বেড়াতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ওল্ড দিঘার জগন্নাথ ঘাটে তৈরি হবে পুরীর আদলে জগন্নাথ দেবের মন্দির। এই কাজ হিডকো সংস্থা দিয়ে করানো হবে।তা নিয়ে প্রথম পর্যায়ে কাজ শুরু হয়েছিল ওল্ড দিঘার জগন্নাথ ঘাটের কাছে।পরবর্তীকালে বনদপ্তরের সঙ্গে জায়গা নিয়ে সমস্যা হওয়ায় সেখানে মন্দিরের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে এই মন্দিরের জায়গা স্থানান্তরিত করা হয় নিউ দিঘার দীঘা লারিকা হলিডে ইন এর পাশে।সেখানে ২২ একর জায়গা জুড়ে তৈরি করা হচ্ছে জগন্নাথ দেবের মন্দির এর কাজ।প্রথম পর্যায়ে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়।
ইতিমধ্যেই বাউন্ডারি ওয়ালের কাজ শেষ হয়েছে। মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কাজ শুরু হলো নারকেল ফাটিয়ে ভিত্তিপ্রস্তরের।কাজের শুভ সূচনা করলেন মৎস্য মন্ত্রী অখিল গিরি ।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি, হিডকোর কর্মকর্তাগন, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস,পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শম্পা মহাপাত্র,রামনগর ১ ব্লকের ব্লক আধিকারিক বিষ্ণুপদ রায় ও এলাকার জনপ্রতিনিধিগণ। বিধায়ক তথা মন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর ইতিমধ্যেই দীঘা আসার কথা রয়েছে।দীঘা, তাজপুর মান্দারমনি ও নায়াচরে বেশকিছু প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে সেইসঙ্গে জগন্নাথ মন্দিরের কাজ পরিদর্শন করবেন।পুরীর আদলে এই মন্দির ও উচ্চতায় তৈরি করা হবে। মন্দিরের আনুষঙ্গিক পরিকাঠামো ও গড়ে তোলা হবে এই ২২ একর জায়গার উপরে।সেখানে মন্দিরের ভোগ রান্না, আনুষঙ্গিক দোকানপাট ও সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে যাবতীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে বলে তিনি জানান।
বক্তব্যে জেলা শাসক দীঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পূর্ণেন্দু মাঝি বলেন, এই মন্দিরের বাউন্ডারি ওয়াল তৈরি করার সময় বেশকিছু স্থানীয় মানুষ সমস্যা সৃষ্টি করেছিলেন। সেইগুলো সমাধান করা সম্ভব হয়েছে ,তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন এই যে বালিয়াড়ির উপর তৈরি করা হচ্ছে জগন্নাথ দেবের মন্দির সেখানে বেশ কিছু স্থানীয় লোক বালি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন।তিনি বলেন, এটা যেমন কড়া হাতে দমন করা হবে,তেমনি বালিয়াড়িকে ঠিক রেখে বালিয়াড়ির উপরেই আনুষঙ্গিক জিনিস ও প্রকৃতির সৌন্দর্য ধরে রাখার কিছু জিনিস তৈরি করা হবে।
তবে বালিচুরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং পুলিশ প্রশাসনকে নজরদারি চালাতে হবে ।সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেন ,জগন্নাথ দেবের যখন রথযাত্রা হবে সেখানে মাসির বাড়ি বা যারা রথ টানবে তার জন্য বেশ প্রশস্ত জায়গা দরকার হয়েছে। সেখানে প্রশস্ত রাস্তার প্রয়োজন রয়েছে। তাই ওল্ডদিঘা কিংবা নিউ দীঘা মাসির বাড়ি তৈরীর জন্য যে প্রশস্ত জায়গা দরকার ও রাস্তার প্রয়োজন তার জন্য ডিএসডি এ ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করে প্রায় ৫০ মিটার চওড়া রাস্তা তৈরি করার একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে ।
সেইসঙ্গে জানানো হয়েছে যে জায়গায় প্রথমে জগন্নাথ দেবের মন্দির হওয়ার কথা ছিল সেই ওল্ড দিঘার জগন্নাথ ঘাটটিকে জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি করা যায় কিনা তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। তিনি আরো বলেন, এই জগন্নাথ দেবের মন্দির তৈরি হলে দিঘাতে আরো কয়েক লক্ষ পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে এবং সেই সঙ্গে দীঘার পরিকাঠামো যেমন গড়ে তোলা হবে তেমনি আর্থিকভাবে অনেক স্বনির্ভর হবে দীঘা এলাকার মানুষজন।