ফোনে ৯ বছরের ছেলে বার বার বাবাকে ডাকছিল,শেষ রক্ষা হলো না ,স্ত্রীর মৃত্যুতেই আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে ওঠেন সুজিত।
কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে মাস খানেক আগেই মৃত্যু হয় স্ত্রীর।তার পর থেকেই অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন লেকটাউনের শ্রীভূমির বাসিন্দা বছর ৩৬-এর সুজিত অধিকারী৷৮তলার কার্নিশ থেকে ফিরিয়ে আনতে শেষ চেষ্টা হিসেবে ফোনে ৯ বছরের বড়ো ছেলে বার বার বাবাকে ডাকছিল৷কিন্তু ছেলের গলা শুনেও একবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকানো ছাড়া সাড়া দেননি লেকটাউনের বাসিন্দা সুজিত অধিকারী৷অবশেষে মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের সেই কার্নিশ থেকে হাত ফস্কে নীচে পড়ে যান তিনি৷ছোটবেলাতেই বাবা মাকে হারিয়েছিলেন সুজিত৷ কিন্তু বিয়ের পর স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে ছোট্ট সংসারে সুখের অভাব ছিল না৷কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে মাস খানেক আগেই স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন লেকটাউনের শ্রীভূমির বাসিন্দা ছত্রিশ বছরের সুজিত অধিকারী৷ স্নায়ু সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেওয়া দু’ দিন আগেই মল্লিকবাজারের ওই হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল সুজিতকে৷ এ দিন দুপুরে সেই হাসপাতালেরই ৮ তলার কার্নিশে গিয়ে বসেন আত্মহত্যাপ্রবণ সুজিত৷পেশায় লোহা ব্যবসায়ী সুজিতের দু’টি সন্তান রয়েছে৷ দুই ছেলের বয়স যথাক্রমে ৯ এবং ৫ বছর৷আপাতত গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সুজিত৷ সুজিতের কিছু হয়ে গেলে তাঁর সন্তানদের কথা ভেবেই দিশেহারা সুজিতের ঠাকুমা শিবানী অধিকারী৷৬মাস বয়স থেকে সুজিতকে কোলে পিঠে মানুষ করেছেন শিবানীদেবীই৷এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ লেকটাউনের ফ্ল্যাটে মল্লিকবাজারের হাসপাতাল থেকে ফোন করে ঘটনার খবর দেওয়া হয়৷এর পরে সুজিতকে নিরাপদে উদ্ধার করতে ভিডিও কলের মাধ্যমে বড় ছেলেকে দিয়ে তাঁকে কথা বলানোর চেষ্টা করা হয়৷ছেলে বারবার ডাকলেও কার্নিশ থেকে ফিরে আসেননি সুজিত৷সুজিতের ঠাকুমা শিবানীদেবী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমাদের সংসারে কোনও সমস্যা ছিল না৷ কিন্তু কুড়ি-পঁচিশ দিন আগে স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই নাতি বদলে গেল৷হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ তুলে সুজিতের পিসি বলেন, ‘এত বড় হাসপাতালে কারও নজরে পড়ল না যে ও কার্নিশে চলে গেল?অন্তত সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক৷ নাহলে ছেলে দুটোর কী হবে?’এই একই প্রশ্ন সুজিতের প্রতিবেশীদেরও৷