মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে বিজেপির বিক্ষোভ এবং ডেপুটেশন প্রদান। একাধিক দাবি তুলে ডেপুটেশন প্রদান করল ব্লক বিজেপি। উপস্থিত ছিলেন দলীয় নেতৃত্বরা। সেখান থেকে তীব্র আক্রমণ করা হল রাজ্যের শাসকদলকে। যদিও পাল্টা সাফাই তৃণমূলের। তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। বিক্ষোভ এবং ডেপুটেশন উপলক্ষে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী। যে কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা হারাতে তৎপরর ছিল পুলিশ। যদিও এই বিক্ষোভ এবং ডেপুটেশন কে ঘিরে উত্তেজনা ছিল প্রচন্ড।মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে ডেপুটেশন প্রদান করা হয়। ডেপুটেশন দেওয়া হয় হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বিডিওর কাছে। একাধিক দাবি তুলে এই ডেপুটেশন প্রদান করা হয়। সাথে ব্লক চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। ডেপুটেশন প্রদানের জন্য উপস্থিত ছিলেন উত্তর মালদা জেলা বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুপেশ আগরওয়াল, জেড পি ১০ মন্ডল সভাপতি, জেড পি যুব মোর্চা মণ্ডল সভাপতি মনোজ দাস, বিজেপি নেতা দীপক ঋষি, চন্দ্রনাথ রায় সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। সেখান থেকেই রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করা হয়। দুর্নীতি ইসু তুলে তৃণমূলকে এক হাত নেন বিজেপি নেতা রুপেপে আগরওয়াল। এদিন মূলত এলাকার বেশ কয়েকটি সমস্যাকে সামনে রেখে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। তার মধ্যে রয়েছে রাস্তাঘাট, ১০০ দিনের কাজ এবং হাসপাতালের সমস্যা। হরিশ্চন্দ্রপুরের অন্যতম দুটি ব্যস্ততম রাস্তা হাসপাতাল এবং ব্লক যাওয়ার দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশায় পড়ে রয়েছে। রাস্তা সংস্কার না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বিজেপি। এছাড়া বিজেপির অভিযোগ হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েতে লাগাম ছাড়া দুর্নীতি হয়েছে ১০০ দিনের কাজ সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে। উল্লেখ করা হয়েছে বন্যা ত্রাণ দুর্নীতির কথা। এগুলি নিয়েও দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি। এছাড়া এই মুহূর্তে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে একটি নতুন ভবন নির্মিত হচ্ছে। অভিযোগ সেখানেও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ হচ্ছে। সেই দিকটিও তুলে ধরা হয় ডেপুটেশনে। সাথে বিজেপির পক্ষ থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। সেখান থেকে বিজেপি নেতৃত্বের কটাক্ষ তৃণমূল দলটা সম্পূর্ণ চোরে পরিণত হয়েছে। চাকরি থেকে শুরু করে চাল চুরি। উঁচু তলার নেতা থেকে নিচু তলার কর্মী সকলেই চোর। ডেপুটেশন দিতে গিয়ে ঠিক এই ভাবেই আক্রমণ শানান বিজেপি নেতারা। সাথে তাদের দাবি দ্রুত পূরণ না হলে রাস্তা অবরোধের ডাক দিয়েছে বিজেপি।
উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রুপেশ আগরওয়াল বলেন,” চাকরি চুরি থেকে চাল চুরি। সম্পূর্ণ দুর্নীতি-গ্রস্ত দল তৃণমূল। এদের উঁচু তলার নেতৃত্ব থেকে বুথ লেভেলের কর্মী সকলেই চোর। হরিশ্চন্দ্রপুর জুড়ে অরাজকতা এবং দুর্নীতি চলছে। ব্যস্ততম রাস্তা গুলি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশায়। পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে দুর্নীতি। হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে। সঠিক ভাবে নর্দমা পরিষ্কার করা হচ্ছে না। এই সমস্ত দাবি নিয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে ব্লকে। অবিলম্বে এর সুরাহা না হলে আমরা রাস্তা অবরোধ করবো।”
এই নিয়ে বিজেপিকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। হরিশ্চন্দ্রপুর তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, “বিজেপির এখানে কোনো জমি নেই। রাজ্য-জুড়ে উন্নয়ন করছে মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্বে তৃণমূল। অপরদিকে মোদী প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছু দেয় নি। বিধানসভা ভোটে বিপর্যস্ত হয়েছে বিজেপি। পরবর্তীতে পুরো ভোটেও বিশাল জয় পেয়েছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি বলে কিছু থাকবে না। এখন এসব বলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনে নজরে আসতে চাইছে।
এই মুহূর্তে রাজ্য জুড়ে রাজনৈতিক তরজা চরমে। তৃণমূল মহাসচিব এবং বীরভূমের দাপুটে জেলা সভাপতি এই মুহূর্তে জেলে। ইডি এবং সিবিআই কে ব্যবহার করার রাজনীতির অভিযোগ তুলছে তৃণমূল। পাল্টা বিজেপি বারবার হুঙ্কার দিচ্ছে যে এখনো তৃণমূলের বহু নেতাকে জেলে যেতে হবে। যা নিয়ে রীতিমত সরগরম রাজ্য রাজনীতি।