বিধবা বৌমার বিয়ে দিয়ে নজির গড়লেন শ্বশুর শাশুড়ী
রাজা রামমোহন, বিদ্যাসাগর বিধবা বিবাহের প্রচলনে এগিয়ে এলেন সুতাহাটার পুলকার চালক নকুল ঘাটি। নিজের কন্যার মতো সম্প্রদান করলেন বৌমাকে।
সোমবার বিয়ের অনুষ্ঠানে বসল নহবত, বাজল সানাই। ফুলের তোরণে সেজে উঠল ঘাটি পরিবারের উঠোন। অগ্নিসাক্ষী করে ‘যদিদং হৃদয় তব, তদিং হৃদয়ং মম’ মন্ত্রোচ্চারণ, সিঁদুরদান, মালাবদল, উলুধ্বনিতে মুখরিত ছাদনাতলা। বিয়ের মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের পর সোমবার সন্ধ্যায় বর কনেকে বরণ করে নেওয়ার জন্য সুতাহাটার অনন্তপুরে বসল ‘রিসেপশান’র আসর। বিজ্ঞানমনস্ক নকুলবাবু অবশ্য এদিন কোভিডের বিধি-নিষেধ মেনেই অতিথিদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন। আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশী এবং অতিথিরা নবদম্পতিকে আশীর্বাদের পর খাওয়াদাওয়া করলেন রীতিমত কব্জি ডুবিয়ে। প্রত্যন্ত গ্রামের মধ্যে সমস্ত সামাজিক সংস্কার ভেঙে এমন সাড়ম্বরে বিধবা বিবাহের আয়োজন প্রশংসা কুড়িয়েছে। গ্রামের গরীব পুলকার চালকের আধুনিকমনস্কতায় গর্বিত প্রতিবেশীরাও।
২০২০ সালে মহিষাদলে একটি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় নবকুমারবাবুর একমাত্র ছেলে অর্নব ঘাঁটির। ছেলে মৃত্যুর পর বছর তিনেকের ছেলেকে নিয়ে শ্বশুর শাশুড়ীর কাছে থেকে যায় বছর ২৫ শের বৌমা শুভ্রা। ছেলের মৃত্যু শোক ভুলে গিয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকেরা বৌমার অনুমতি নিয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করে। হলদিয়ার রামগোপালচক এলাকার বাসিন্দা মধু সাঁতরার সাথে বিয়ের ব্যবস্থা হয়। নিয়ম মেনেই সোমবার দুইহাত এক করে দিলের দুই পরিবার।