স্বামী স্ত্রীর যুগল মৃতদেহ উদ্ধার, চাঞ্চল্য ডোমকলে।
ডোমকল থানার পুরাতন বিডিও মোড় সংলগ্ন রমনা এতবারনগর এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে ওই যুগলের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃতদের নাম সুনীল কুন্ডু (৫২) এবং আন্না হালদার (৪২) । তাদের বাড়ি ডোমকলের অম্বরপুর ও মধুরকুল এলাকায়। স্ত্রীর মাথা রক্তাক্ত ছিল। অন্য দিকে স্বামীর মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয় কীটনাশকের একটি শিশি। পুলিশের অনুমান দুজনের মধ্যে ঝগড়া ঝামেলার জেরে স্বামী তার স্ত্রীকে মাথায় মেরে হত্যা করে। পরে স্বামী কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
জানা গিয়েছে দু’জনেরই দ্বিতীয় বিবাহ ছিল। সুনীল কুন্ডু পেশায় ছিলেন ডোমকল ব্লকের খাদ্য দফতরের অস্থায়ী কর্মী। আর আন্না হালদার ছিলেন অঙ্গনওয়াড়ির প্রধান সহায়িকা। বছর দেড়েক আগে আন্না হালদারের প্রথম স্বামী মারা যায়। তার ছ’মাস পরে সুনীল কুন্ডুর সঙ্গে রেজিস্ট্রি বিয়ে হয় তার। আন্নার প্রথম পক্ষের ছেলের বউ রাখী বিশ্বাস জানান “ বিয়ের পর থেকেই শাশুড়িমা ও নতুন শ্বশুর পুরাতন বিডিও মোড়ের ওই ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।” তিনি জানান “মঙ্গলবার সকাল থেকেই ফোনে তাদের পাওয়া যাচ্ছিল না। ভেবেছিলাম কাজে আছে। সেখান থেকে ফিরে ফোন করবে। কিন্তু রাত পর্যন্ত কোনো ফোন করেনি। আমরা আবার ফোন করলে রিং হয়ে যাচ্ছিল কিন্তু কেউ ধরছিলেন না।” ওই অবস্থায় বাড়ির লোকেদের সন্দেহ হয় ও তারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করেন। মৃতের দিদি চায়না হালদার জানান “ দিদির ছেলের বউ আমাকে জানালে রাতেই বেড়িয়ে পরি ও এই ভাড়া বাড়ির সামনে আসি। দেখি ভাড়া বাড়ির কোলাপসিবল গেট ভিতর থেকে তালা মারা। ঘটনায় সন্দেহ হলে লোকেদের পরামর্শে থানায় জানান হয়।” খবর পেয়ে ডোমকলের আইসি জ্যোতির্ময় বাগচি বিশাল পুলিশ বাহীনি নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছন। স্থানীয়রা জানান পুলিশ এসে কোলাপসিবল গেট ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে ঘরের কাঠের দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে। দেখা যায় স্ত্রী এক ঘরে বিছানায় পড়ে আছে। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন ও রক্তে বিছানা ভিজে আছে। অপর দিকে স্বামীও পৃথক ঘরে পড়ে আছে । তার পাশে কীটনাশকের শিশি পড়ে। যা দেখে স্থানীয়রা বিস্মিত হয়ে যান। তারা জানান দুজনের মধ্যে মাঝে মধ্যে ঝামেলা হতো। সেটা তাদের দাম্পত্য কলহ ভেবে আমল দিত না কেউই । কিন্তু তার পরিণতি যে এতটা ভয়ংকর হবে বুঝতে পারেননি তাঁরা। জানা গিয়েছে সুনীল কুন্ডুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে আছে। দ্বিতীয় বিয়ের পর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আন্না হালদারের দিদি চায়না হালদার জানান “সোমবার রাতেও দুজনের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। ভালোই ছিল। হঠাৎ করে কি ঘটলো বুঝতে পারছি না, যে মরেই যেতে হল।” ঠিক কি কারনে ওই ঘটনা ঘটলো জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।