৯ জনকে খুনের ঘটনায় ৪৩ বছর পর ১৩ জনকে সোমবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিলো বীরভূম জেলা আদালত, আদালতের বিচার শুনতে আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিল কোট গ্রামের বাসিন্দারা। ১৯৮১ সালের ৮ অগস্ট, তৎকালীন ময়ূরেশ্বর থানার কোটগ্রামে ৯জন যুবককে খুনের ঘটনায় সোমবার দোষী সাব্যস্ত ১৩ জনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিল অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালত। প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। অনাদায়ে অতিরিক্ত ১ মাস জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পাশাপাশি বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনায় প্রত্যেককে ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানার অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডের সাজা দেন বিচারপতি। এই সাজার বিরুদ্ধে চাইলে উচ্চ আদালতে আবেদন করা যাবে এবং প্রয়োজনে জেলা আইনি পরিষেবা সংস্থার তরফ থেকে বিনামূল্যে আইনজীবী পাওয়া যাবে বলেও জানান বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, বীরভূমের মাড়গ্রামের বাসিন্দা ওই ৯ জন যুবকের খুনের ঘটনায় বীরভূমের মল্লাপুরের কোটগ্রামের ৭২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। ৮ জন সাক্ষীর বক্তব্য শোনার পর গত শুক্রবার ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালত।কোটগ্রাম থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে মাড়গ্রাম থেকে একটি পরিবারের ৬ জন যুবক এবং ওই গ্রামের আরও তিন যুবক কোটগ্রামে এসে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। বিবাদ ক্রমশ বাড়তে থাকে, চলে হাতাহাতিও। এরপরই গোটা গ্রাম মিলে ঘিরে ধরে ওই ৯জন যুবককে। তারা একটি বাড়ির ভিতর লুকিয়ে বাঁচার চেষ্টা করলে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে ও লঙ্কার গুঁড়ো ছড়িয়ে তাদের বাড়ি থেকে বের করে এনে কুপিয়ে খুন করা হয়। এরপরই ওই যুবকদের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে কোটগ্রামের ৭২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। দীর্ঘ ৪৩ বছর মামলা চলার মাঝে একাধিক অভিযুক্তের মৃত্যু ঘটেছে, অনেকে সাক্ষী দিতে আসেনি।
অবশেষে শুক্রবার দোষী সাব্যস্ত হন ১৩ জন। সোমবার মামলার সাজা ঘোষণা করা হয়। সাজা শুনতে জেলা আদালতের সামনে ভিড় উপচে পড়ে গ্ৰাম বাসিদের।