ফের মধ্যযুগীয় বর্বরতা,ডাউনী অপবাদে একঘরে বাঁকুড়ার আদিবাসী পরিবার।
ডিজিট্যাল দুনিয়ায় দাঁড়িয়ে মধ্যযুগীয় বর্বতার শিকার দুটি আদিবাসী পরিবার। ডাইনী অপবাদ দিয়ে মোটা টাকার জরিমানা ধার্য্য আর জরিমানা না দিতে পারায় গ্রামের মোড়লদের নিদানে গ্রাম থেকে একঘরে করে রাখা হয়েছে দুটি পরিবারকে।শুধু তাই নয় ওই দুটি বাড়ি থেকে লুটপাট করা হয়েছে ছাগল, মুরগি, হাঁস ও অনান্য জিনিসপত্র এমনি অভিযোগ সামলে এলো গ্রামের মোড়লদের বিরুদ্ধে। বিচার চেয়ে থানায় দারস্থ বাঁকুড়া সদর থানার মানকানালী গ্রাম পঞ্চায়েতের কেন্দবনী গ্রামের ওই দুটি অসহায় পরিবার।
বাঁকুড়ার সদর থানার প্রত্যন্ত আদিবাসী গ্রাম কেন্দবনী।এই গ্রামের একেবারেই শেষ প্রান্তে পাশাপাশি দুটি আদিবাসী পরিবার যারা গ্রামের মোড়লদের নিদানে গ্রামের থেকে একঘরে।একঘরে হয়ে রয়েছেন কালিপদ সরেনের পরিবার ও তাঁর কাকাতো বোনের পরিবার। নির্যাতিত পরিবার সুত্রে জানা গেছে,মাস ছয়েক আগে কালীপদ সোরেনের স্ত্রী বালিকা সোরেন মনসা পুজো করার স্বপ্নাদেশ পান। প্রাথমিকভাবে গ্রাম ষোলআনা নিষেধ করলেও সে কথা শোনেনি। অভিযোগ, এরপরই কালীপদ সোরেনের স্ত্রী বালিকা সোরেনকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে একঘরে করার নিদান দেন গ্রামবাসীদের একাংশ। নিদান দেওয়া হয় কালীপদর পরিবারের সাথে কেউ কথা বললে ধার্য্য করা হবে জরিমানা।গ্রামের মোড়লদের সেই নিদান সত্বেও কালীপদর পরিবারের সাথে গোপনে যোগাযোগ রেখেছিলেন পাশেই বসবাস করা কাকাতো দুই বোন সরস্বতী সোরেন ও শুকুরমনি সোরেন।সম্প্রতি সেই যোগাযোগের কথা জানতে পারার পরই বর্বরতার খাঁড়া নেমে আসে ওই দুই বোনের পরিবারেও। অভিযোগ গ্রামের মোড়লদের একাংশ প্রথমে দুই বোনের পরিবারকে একঘরে করার পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করে। জরিমানার টাকা দিতে দেরী হওয়ায় সেই অঙ্ক গিয়ে পৌঁছায় পঁচিশ হাজারে। সেই টাকা দিতে না পারায় সম্প্রতি দুই বোনের সংসারে পালিত বেশ কয়েকটি ছাগল, শুকর ও মুরগী সহ আসবাব লুঠ করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর আতঙ্কে বাঁকুড়া সদর থানার দ্বারস্থ হয় সরস্বতী ও শুকুরমনির পরিবার। এখন বিচারের আশায় দুটি নির্যাতিত পরিবার।
গ্রামের মোড়লদের বিরুদ্ধে ওঠা এই ফতোয়া দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন মোড়লরা। একঘরে করা,জরিমানা করা বা মুরগী ছাগল লুঠপাটের অভিযোগও অস্বীকার করা হয়েছে।বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বাঁকুড়া ২ নং ব্লকের বিডিও।