শিল্পীর কোনো বয়স হয়না, শিল্পের কদরও টাকায় কেনা যায় না। পথের ধারে বসে ছোট থেকে বড় বিভিন্ন আকারের মূর্তি বানিয়ে তাক লাগাচ্ছে ক্ষুদে শিল্পী রাহুল রজক। বছর ১২ এর এই বালক আজ শুধু নিজের শখ মেটাতেই নয়, পারিপার্শিক এলাকার মানুষদের বায়না দেওয়া মূর্তি প্রতিমা বানাতে ব্যস্ত। পাঁচ বছর বয়স থেকে মূর্তি বানানোর চেষ্টা, নিজের হাতে দুর্গা সরস্বতী থেকে শুরু করে নানা দেবদেবীর মূর্তি বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বহুবার। তার গুনে মুগ্ধ হয়ে হাত বাড়িয়েছে বেলঘরিয়া ফুটবল ক্লাব।

বাবা রিক্সা চালক দিন আনতে দিন যায়। রোজ দুবেলা ঠিকমতো জোটে না মন ভরে খাবার। নানা অভাব অনটন জীবন যাত্রায় বাধা হয়ে দাঁড়ালেও পাঁচ বছর বয়স থেকে মাটি ঘেঁটে ঘেঁটে বড় হওয়া রাহুলের। বেলঘরিয়া হাই স্কুলের ছাত্র সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র রাহুল রজক। রাস্তার ধারে এক কোণায় বসে নিজের মনে মাটির নানা মূর্তি গড়ে আজ প্রশংসা পাচ্ছেন গোটা এলাকা জুড়ে। কেউ তুলি রং কিনে এনে মূর্তি বানাতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন, আবার কেউ অগ্রিম সরস্বতী পুজো উপলক্ষে মূর্তির বায়না দিয়ে যাচ্ছেন ক্ষুদে শিল্পীকে। পড়াশুনোর পাশাপাশি শিল্পীর এই গুনে সম্পূর্ন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছে বেলঘরিয়া ফুটবল ক্লাবের সদস্যরাও। পাশে থাকার আশ্বাস এলাকাবাসীদেরও।

কোনো রকম সংসার চললেও বাবা নিজের ছেলের পড়াশুনোর জন্যে কোনো রকম খামতি রাখেন না। নিজের অর্থের অভাবে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ না পেলেও রাহুলের পড়াশুনোর জন্যে সব রকম আয়োজন করছে তিনি। তবুও ছেলের পড়াশুনোর থেকে বেশি আপন হয়ে উঠেছে আঁকার খাতা, রং পেন্সিল, তুলি, মাটি ও কাদা। আর একের পর এক ছোট বড় মূর্তি বানিয়ে আজ সকলের কাছে পরিচিতি লাভ করেছে ক্ষুদে শিল্পী রাহুল। নিজের প্রচেষ্টায় আর ঈশ্বর প্রদত্ত প্রতিভায় রাহুল রজক ভবিষ্যতে নিজের হাতের কাজ নিয়েই আরও এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ মাপের প্রতিমা বানানোর ইচ্ছে রয়েছে তার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

fourteen − 11 =