ডায়েট করা কি ভালো?ডায়েট করলে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত?প্রতিদিনের ডায়েটে কোন কোন খাবারগুলি অবশ্যই রাখা উচিত ?বিস্তারিত জানালেন অভিজ্ঞান শীল,যিনি সার্টিফাইড ডায়াবেটিস এডুকেটর এমএসসি(MSC) ইন ক্লিনিক্যাল ডায়েটিটিকস ডিএফএসএম (DFSM) ডায়েট অ্যান্ড ফুড সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট। ট্রেনী ডায়েটিশিয়ান ইন হরিজন লাইফ লাইন মাল্টি স্পেশালিটি হসপিটাল


ডায়েট করা কি ভালো:-
প্রথমেই বলা ভালো যে ইন্ডিভিজুয়াল ডায়েট প্লান কোনো অভিশাপ নয় বরং এটি আশীর্বাদ। তবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। খাদ্য ভালও তো বটেই, সাথে অনেক সময় এটি কিন্তু ক্ষতির কারণ ও তাই সতর্কতা অবলম্বন করে খাদ্য চয়ন করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।ডায়েট মানে আলাদা কিছু নয়।বরং আমরা দৈনন্দিন জীবনে যা খেয়ে থাকি সেটাই। তবে ডায়েটে শুধুই যে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে সারাদিন এমনটা কিন্তু নয় তবে ভালোর পরিমাণ বেশী রাখলে দিনের একটি সময়ে নিজেকে চিট করাই যেতে পারে।

আমরা বর্তমানে নানান রকমের খাবার খেতে অভ্যস্ত, অনেকে আধুনিক বাজারজাত বিভিন্ন রকমের র’ বীজ খান, দামী প্রোটিন পাউডার খান, ভালো দামী চাল, ওটস খান, সেইগুলি খাওয়াটা যে ভালো নয় সেটা আমি বলবো না। তবে সেইগুলি ছাড়া যে ডায়েট অসম্পূর্ণ এটাও ঠিক মানতে নারাজ। আমরা ভারতবাসী,আমদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য মেনে আমরা খাবার খাই, তাই আমাদের খাবার দুনিয়ায় খুব জনপ্রিয়।অনেক বিদেশী আমাদের দেশে এসে বাঙালি খাবার খেতে পছন্দ করেন।তবে আমরা আধুনিকীকরণের জন্যে সেই সব খাবার না খেয়ে অন্য খাবার খাচ্ছি।
খাদ্য হবে সহজলভ্য, বৈচিত্র্যপূর্ণ, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সম্মত তবেই তো সেই খাবারের গুণাগুণ আমরা চোখে দেখতে পাবো।খাবার খেতে হয় ঠিকই, কিন্তু সঠিকভাবে, সঠিক পরিমাণে সেটি ভুলে গেলে চলবে না।

আমরা অনেকেই অনেক রকমের ডায়েট প্ল্যান ফলো করি, যেমন ফ্যাশন ( ফাড ) ডায়েট, ইন্টারমিটেন্ড ফাস্টিং, হাই ফাইবার ডায়েট, হাই প্রোটিন ডায়েট, লো ফ্যাট ডায়েট, লো কার্বোহাইড্রেট ডায়েট, কীটজেনিক ডায়েট, আরো অনেক। কিন্তু আমদের মাথায় রাখতেই হবে এই ডায়েটগুলির উপকারিতা বেশী দিনের জন্যে নয়। আমরা শর্ট টাইমে ভালো থাকার জন্য কখনো লং টার্ম নিজের হেলথ খারাপ করতে পারিনা।
এই সব ডায়েটগুলোই পরীক্ষালব্ধ, উপকারী এবং ফলোদায়ী, কিন্তু কোনটা কতো দিন ধরে করবো, কেনো বা করছি, কিভাবে করেছি, শারীরিক সব নিউট্রিন্টসের চাহিদা কি পূরণ আদেও হচ্ছে ঠিকঠাক, কতো পরিমাণে খাবো সবটাই এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

তাই সেসব ক্ষেত্রে একজন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ হিসেবে আপনার উচিৎ একজন ক্লিনিকাল ফুড এক্সপার্ট বা ক্লিনিকাল ডায়েটিশিয়ানের সাথে পরামর্শ করা। তার অনুমোদন নেওয়া, তার গাইডেন্স এ পুরোটা করা। নইলে ডায়েট করার পর চুল পড়া, চোখে কম দেখতে পাওয়া, কাঁধ পরে যাওয়া, দুর্বল হয়ে পরা, মাসেল ডেমেজ, মাইক্রো নিউট্রিশন ডেফিসিয়েন্সি এই গুলো খুব কমন।তাই এর থেকে স্পষ্ট ভাষায় বোঝা গেলো যে আপনার বডি অনুযায়ী আপনার ডায়েট করাটা ঠিক হয়নি।

সব শেষে উপায় একটাই , একটি সহজ ক্লিনিকাল ব্যালান্সড ডায়েট প্ল্যান ফলো করা। যা হবে পুষ্টিগুণে সেরা, স্বাস্থ্যসম্মত ও স্বাদে ভরপুর।
যেমন-
ডিম খুব সহজেই আপনার এলাকাতে পাবেন খুব একটা দামও নয়, হার্টের কোনো অসুবিধে না থাকলে একটি ডিম সিদ্ধ রোজ খাওয়া যেতে পারে। সাথে মাছ ও মাংসের পাতলা ঝোল বা স্ট্রু সবজি দিয়ে। প্রোটিন পাবেন ভরপুর। সাথে আসবে গুড কোয়ালিটি ফ্যাট যা নানান বিপাকীয় কাজ ও স্টুল তৈরিতে সাহায্য করে।

সাথে হাইড্রশন মেনটেন করতে শসা সহ নানান সালাড করে খান ফাইবার আসবে চোখ বুজে। বাঙালির ভাত ডাল তো আছেই আর চিন্তা কি কার্বোহাইড্রেট আসবে, প্রোটিন আসবে, মিনারেল আসবে, সব পাবেন ক্লিনিকাল ব্যালান্সড ডায়েট প্ল্যান ফলো করলে।

সাথে গাট মাইক্রো ফ্লোরা ভালো রাখতে সাহায্য করবে দই যা উত্তম প্রবায়োটিকের উদাহরণ। আর কি চাই ইতি ভোজন সমাপ্তম।

অবশ্যই নতুন খাবারকে গ্রহণ করবো, কিন্তু আমাদের পুরনো রীতি নীতিকেও অনুসরণ করবো।তাই ক্লিনিকাল ব্যালান্সড ডায়েট প্ল্যানই সর্বোত্তম, যা থেকে আমরা যথার্থ পুষ্টি লাভ করতে পারি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

twelve + 4 =