শুধু ডায়েট করলেই কি ফিট আপনি ? স্বাস্থ্য রক্ষায় পুষ্টি ও ব্যায়ামের ভূমিকা কতটা?বিস্তারিত জানালেন অভিজ্ঞান শীল,যিনি সার্টিফাইড ডায়াবেটিস এডুকেটর এমএসসি(MSC) ইন ক্লিনিক্যাল ডায়েটিটিকস ডিএফএসএম (DFSM) ডায়েট অ্যান্ড ফুড সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট। ট্রেনী ডায়েটিশিয়ান ইন হরিজন লাইফ লাইন মাল্টি স্পেশালিটি হসপিটাল

বর্তমানে আমরা সবাই মোটামুটি স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বা ডায়েট নিয়ে এইটুকু জেনে গেছি যে চিনি কম, ভাত কম, রুটি কম আর প্রোটিন বেশী ও ফ্যাট কম তাই তো….
আমরা ডায়েট মানেই বুঝি কার্ব লেস, ফ্যাট ফ্রী আর হাই প্রোটিন সমৃদ্ধ ডায়েট শুধু কী তাই? আর এক্সারসাইজ মানে বুঝি জিমে গিয়ে সকাল বিকেল ক্যালোরি ক্ষয় করা।
শুনুন ডায়েট প্ল্যান আর ব্যায়াম দুটোই কিন্তু ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শুধু এক্সারসাইজ করলেই যেমন ফ্যাট কমবে না, তেমন শুধু চিনি না খেলেই কিন্তু ওজন কমবে না। আমাদের শরীর সম্পর্কে আপনারা একটি কথা হয়তো শুনে থাকবেন শরীরের নাম বাবাজি, যা শোয়াবে তেমনি শই। তাই খাদ্য ও পুষ্টিকে যথা সম্ভব ব্যাবহার করতে জানতে হবে আপনার শরীরের নিরিখে। বুঝতে হবে আপনার শরীর আদৌ কি এটা করতে সক্ষম কি না।
আমাদের সবার শরীরের ধরন বা ফ্যাট পার্সেন্টেজ এক নয়। আমাদের লক্ষ্য ফ্রি ফ্যাট মাস-কে কমানো, কখনই অর্গান বা টিস্যু মাস-কে বা মাসেল মাস-কে নয়। তবে সে ক্ষেত্রে জটিলতার শেষ নেই। ডায়েট অত সহজে করা যায় না, তার জন্যে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ প্রয়োজন।
আমরা বর্তমানে বেশী করে বিজ্ঞাপনে র জগতে মোহিত হয়ে আছি, যা দেখছি তাই করছি। বডি টাইপ ও বডির ইনার মেকানিজম দেখে খাদ্য ও তাতে থাকা ম্যাক্রো এলিমেন্ট ও মাইক্রো এলিমেন্ট চয়ন করতে হবে।

আমরা বর্তমানে অনেকেই একদিনে অনেক বেশী মাত্রাতে প্রোটিন নিয়ে নিচ্ছি কোনো রকম পরামর্শ ছাড়া এটি ঠিক নয়। যতোটা ক্যালোরি নিচ্ছি তার কিছুটা হলেও ব্যয় করতে হবে। নিয়মিত কিছু সময় ধরে হাঁটা শুরু করুন বা মাংস পেশী ও জয়েন্টের প্রবলেম থাকলে কি ব্যায়াম করা উচিৎ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
আমাদের কিছু বিশেষ রকমের ব্যায়াম আছে খুব সহজ যেটা যেকোনো বয়সের লোকেরা খুব সহজেই করতে পারবেন। যেমন- সাঁতার, দৌড়ানো, জাম্প, হাঁটা, স্কিপিং ইত্যাদি। এইগুলি করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।

অবশ্যই দেখে নেওয়া প্রয়োজন কার কেমন হার্ট রেট ও তার নিরিখে ভি ওটু ম্যাক্স কতোটা, ব্যায়ামের আগে ওয়ার্ম আপ বাধ্যতামূলক। ২০-৪০ পার্সেন্ট হলো লো ভি ওটু ম্যাক্স, ৪০-৬০ পার্সেন্ট হলো মিডিয়াম ভি ওটু ম্যাক্স, আর ৬০-৯০ পার্সেন্ট হলো হাই ভি ওটু ম্যাক্স। এর নিরিখে সব কিছু নির্ভর করে আমাদের এক একজনের ব্যায়াম কেমন হবে।

এর সাথে এক একজনের সারাদিন ক্যালোরি গ্রহণ, সিম্পল সুগার যেমন চিনি গ্রহণ, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট (stress management) অনেক কিছু নির্ভর করে ওজন বৃদ্ধি বা কমার সময়। আক্ষরিক অর্থে ওয়েট কমানো বা বাড়ানোটা কোনো সঠিক টার্ম নয় আসল হলো একচুয়াল ওয়েট ম্যানেজমেন্ট (actual weight management)।

তাই বালান্স ডায়েট প্ল্যান (balanced diet plan) করুন যেখানে কার্বোহাইড্রেট অবশ্যই মুখ্য ভূমিকা পালন করবে, কিন্তু কি প্রকারের কার্ব খাবেন সেটা উল্লেখ্য।

প্রোটিন থাকবে আপনার ওজনের থেকে ৫ থেকে ১০ গ্রাম বেশী। ফ্যাট ও থাকবে পর্যাপ্ত পরিমাণে । সাথে জল ও ফাইবার থাকবে।

নিজের স্বাদ মত, বাজেট অনুযায়ী, বৈচিত্র্যপূর্ণ ডায়েট প্ল্যান করুন, সাথে অবশ্যই দই খান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

two × 3 =