কথায় বলে সব তীর্থ বার বার,গঙ্গাসাগর একবার। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থা বর্তমান সময়ে সুগম হওয়ার কারণে এই চিরাচরিত ‘মিত’ কে ভেঙে দিয়ে বিশ্বদুয়ারে স্থান পেয়েছে গঙ্গাসাগর মেলা। তাই এখন বলাই যায়, সব তীর্থ একবার গঙ্গাসাগর বার বার।সামনেই গঙ্গাসাগর মেলা আর তাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে।কিছুদিন আগেই গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গঙ্গাসাগরে আসেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা।পাশাপাশি এবার গঙ্গাসাগর মেলার জন্যই শুরু হয়ে গেল নদীতে ড্রেজিং এর কাজ।

আর ২০২৩ গঙ্গাসাগর মেলার জন্য মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজিং এর কাজ করবে এবার সেচ দপ্তর।আনুমানিক কুড়ি কোটি টাকা ব্যয় হবে এই ড্রেজিং এর কাজে। এতদিন পর্যন্ত ড্রেজিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে চুক্তির মাধ্যমে সেচ দপ্তর এই কাজ চালাতো। কিন্তু সেই কাজে দেখা গেছে একাধিক গাফিলতি। তাই এবার সেচ দপ্তর নিজের উদ্যোগেই করবে এই কাজ। মূলত গঙ্গাসাগর মেলায় লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়। আর যেখানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই মুড়িগঙ্গা নদী পেরিয়ে যেতে হবে গঙ্গাসাগরে।যে সমস্ত পুণ্যার্থী বাবুগাট হয়ে ডায়মন্ড হারবারের ওপর দিয়ে গঙ্গাসাগরে পৌঁছান তাদের লড নাম্বার এইটের ভেসেল পেরিয়ে পৌঁছাতে হয় গঙ্গাসাগরে।

অন্যদিকে যে সমস্ত পুণ্যার্থী শিয়ালদা হয়ে কাকদ্বীপ নামখানা ট্রেন পথের মাধ্যমে এসে পৌঁছান চেমাগুড়ি ঘাটে সেখান থেকেই তাদের আসতে হয় গঙ্গাসাগরে। আর তাই মুড়িগঙ্গা নদীর ড্রেসিং এর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিল সেচ দপ্তর। অস্থায়ী হেলিপ্যাডকে স্থায়ীকরণ করার ব্যবস্থাও ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় একাধিক নদীবাদ ভেঙে চিন্তার মুখে পড়েছিল প্রশাসন। গঙ্গাসাগর মেলার আগে কিভাবে সেই নদী বাঁধ মেরামত করা হবে তা নিয়েই একাধিক বৈঠক করা হয়।আর এবারে ট্রেটাপট পদ্ধতিতে অতি শীঘ্রই গঙ্গাসাগর মেলার আগেই নদী বাঁধগুলি মেরামতের কাজ শুরু হলো।

তবে কি এই আধুনিক ট্রেটাপট পদ্ধতি-
মূলত এই আধুনিক ট্রেটাপট পদ্ধতি হল কংক্রিটের পিলারের মাধ্যমে নদীর জলস্রোতকে নিয়ন্ত্রণ করা। যাকে ইঞ্জিনিয়ারিং পরিভাষায় বলা হয় ওয়েব ব্রেকিং।অর্থাৎ নদীমাত থেকে ১০০ মিটার দূরে কংক্রিটের পিলারের মাধ্যমে করা হয় এই ট্রেটাপট নদী বাঁধ।এগুলি জোয়ারের সময় অটোমেটিকালি ডুবে থাকে ভাটার সময় নদীর যে টান থাকে তাকে অনেকটাই রোধ করতে সক্ষম হয় এই বাঁধ।

আর তাই এবার ২০২৩ এর গঙ্গাসাগর মেলার আগে পাইলট প্রোজেক্ট হিসাবে নির্বাচন করা হয়েছে এই ট্রেটাপট নদী বাঁধকে, যেখানে গঙ্গাসাগরের কপিলমুনির মন্দিরের সামনেই শিবিরের ২ নম্বর গেট থেকে ১০০ মিটার দূরে ৫৫০ মিটার এই ট্রেটাপট নদী বাঁধ তৈরি করা হবে। যা অনেকটাই মুড়িগঙ্গা নদীর জলস্রোতকে রক্ষা করতে পারবে বলে ধারণা করছেন আধিকারিকেরা। কেন্দ্রের কাছে বারে বারে আবেদন জানানোর পরেও পাকা নদী বাঁধের ছাড়পত্র না মেলাতেই গঙ্গাসাগর মেলার আগে এই চিন্তা ভাবনা নেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর এই পদ্ধতি কাজ করলে আগামী দিনে সেচ দপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন নদী বাঁধ এই ভাবেই মেরামত করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

five × 2 =