দিবসে এক নারীর অন্যরকম লড়াই এর কাহিনী ক্যান্সার জয় করে শিক্ষিকা হতে চান, NRS হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা চন্দনগরের ছাত্রীর। কেমো চলছিল তাই গতবছর পরীক্ষা দিতে পারেননি,এবার যন্ত্রণায় কাতর হয়েও হাসপাতালে বসে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন চন্দননগরের

সেই ছাত্রীর মা মারা যায় তার বয়স যখন মাত্র এগারো দিন।তারপর থেকেই চন্দননগর KMDA পার্কের পাশে মামার বাড়িতে বড় হওয়া।বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে আলাদা সংসারে থাকেন।মাঝে মধ্যে এসে খোঁজ নেন।তবে প্রাক্তন জুটমিল শ্রমিক মামা তাকে বড় করেছেন চন্দননগর লালবাগান বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী।এগারো ক্লাসে পড়ার সময় তার অসুস্থতা ধরা পরে। জানা যায় ওভারিতে টিউমার রয়েছে। বায়োপসিতে ধরা পরে ক্যান্সার। এরপর শুরু হয় কেমো থেরাপি। মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে পাশ করেছিলেন। অসুস্থতার কারণে গতবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারেননি।

তবে তার মনের জোর ছিল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবেন।সেই মতো চলছিল প্রস্তুতি।চন্দননগর কৃষ্ণভাবিনি নারী শিক্ষা মন্দিরে পরীক্ষার সিট পড়ে।প্রথম দিন বাংলা পরীক্ষা দেওয়ার পরই আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে।সারারাত পেটে যন্ত্রণায় ঘুমতে পারেননি। তার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জানান,তাকে ফোন করে শরীর খারাপের কথা জানায়। আর পরীক্ষায় বসতে পারবে কিনা তানিয়ে দ্বিধা তৈরি হয়।স্থানীয় চিকিৎসক দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন।দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা স্কুলেই দেন। প্রধান শিক্ষিকা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের হুগলি জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নীলরতন সরকার হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়।ছাত্রী জানায় হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষা দেবে। সেইমতো সব ব্যবস্থা করা হয়।

প্রধান শিক্ষিকা বলেন,অসম্ভব মনের জোর সুজলীর। শারীরিক এত অসুস্থতা সত্বেও সে স্কুলে আসত পড়াশোনায় মনোযোগই ছিল। কাল পরীক্ষার পর কথা হল, বলল খুব যন্ত্রণা হচ্ছে, তাও পরীক্ষা শেষ করেছে, বড় হয়ে শিক্ষিকা হতে চায়, আমরা চাই ও বড় হোক, ছাত্রীর প্রতিবেশী অনামিকা সরকার বলেন, ছোট থেকে মা নেই মেয়েটার, মামা দিদিমার কাছে মানুষ। দিদিমাও কিছুদিন আগে মারা গেছেন। অনেক প্রতিকুলতার মধ্যে লড়াই করে যাচ্ছে। রোগটা ভালো নয়। আমরা চাই ও সুস্থ হয়ে উঠুক। ভালো রেজাল্ট করুক।

হুগলি জেলা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন,গত বছর ওই ছাত্রী পরীক্ষায় বসতে পারেনি।কারণ তার দুরারোগ্য রোগের আক্রান্ত হয়। তখন তার কেমো থেরাপি চলছিল। এ বছরে পরীক্ষায় বসেছে।যে স্কুলে সিট পড়েছিল সেখানে সিক রুমে দুটি পরীক্ষা দেওয়ার পরে অসুস্থ হয়। তাকে নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে হয়।আমি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি বিষয়টি জানাই। তিনি অনুমতি দেন। তারপর সব ব্যবস্থা করে এই হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষা দিচ্ছে ওই ছাত্রী। ওর মনের জোর আছে, আমরা ওর সাফল্য কামনা করি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

11 − 7 =