দুই ছাত্রকে অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়ার পরও ওই দুই ছাত্রের মৃতদেহ মিলল বসিরহাটে। বাগুইআটি থানার ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন ছাত্রের পরিবার। এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী পলাতক। তার খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
গত মাসের ২২ তারিখে বাগুইআটির জগৎপুর খাল ধারের বাসিন্দা অতনু দে ও অর্জুনপুরের বাসিন্দা অভিষেক নস্কর দুই ছাত্র বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। এরপরেই তাদের পরিবারের কাছে এক কোটি টাকার মুক্তিপন চেয়ে মেসেজ আসে। তারপরেই পরিবারের তরফে বাগুইআটি থানায় অভিযোগ জানানো হয়।
পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ কোন রকম ভাবেই সাহায্য করেনি। গতকাল রাতে পুলিশের তরফে জানানো হয় অতনু দে ও অভিষেক নস্কর নামে নিখোঁজ দুই ছাত্রের দেহ মিলেছে বসিরহাটে। এরপরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মৃতের পরিবার থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা।
পরিবার সূত্রে খবর, অতনু দে বাইক কেনার জন্য সত্যেন্দ্র চৌধুরীকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেয়। এরপর ২২ আগস্ট বাইক কেনার জন্য অতনু দে ও অভিষেক নস্করকে সঙ্গে নিয়ে যায় সত্যেন্দ্র চৌধুরী। তারপর থেকে দুই অতনু দে ও অভিষেক নস্কর নিখোঁজ হয়ে যায়। এরা সম্পর্কে মামাতো পিসতুতো ভাই।
২৪ আগস্ট বাগুইআটি থানায় অপহরনের অভিযোগ করেন অতনু দে’র বাবা বিশ্বনাথ দে। বিশ্বনাথ দে’র ফোনে এক কোটি টাকা মুক্তিপন চেয়ে ম্যাসেজ আসতে থাকে। পরিবারের দাবি, পুলিশকে অভিযোগ জানানোর পর এবং এক কোটি মুক্তিপন চাওয়ার কথা জানানোর পরও পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশ ব্যবস্থা নিলে দুই ছাত্রকে জীবিত পাওয়া যেত। এভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দুই ছাত্রের মৃত্যুর খবর মিলত না। গতকাল অভিজিৎ বোস নামে একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাগুইআটি থানার পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরীর নাম। অভিজিৎ বোস, শামীম আলী, সাহিল মোল্লা ও দিব্যেন্দু দাস কে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী পলাতক। তার খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
এদিকে সত্যেন্দ্র চৌধুরীর জগৎপুরে বাড়িতে ভাঙচুর চালায় অতনুর পরিবার ও প্রতিবেশিরা। ঘটনাস্থলে যায় বাগুইআটি থানার পুলিশ।
পুলিশের দাবী, খুন করার উদ্দেশ্য নিয়ে আগে থেকে গাড়িতে দড়ি রেখে ছিলো। অতনু দের থেকে বাইক কিনে দেওয়ার পঞ্চাশ হাজার টাকা নেই সত্যেন্দ্র চৌধুরী। পরে আরো টাকার দাবী করে সত্যেন্দ্র। সেই টাকা দিতে অস্বীকার করে। এরপরই দুজনকে খুন করা হয়। এরপর বসিরহাটের আলাদা আলাদা জায়গায় ফেলা দুই ছাত্রের মৃতদেহ।